নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফী বিন কবিরের সরকারি মোবাইল নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে কল দিয়ে টাকা দাবি করেছে একটি প্রতারক চক্র।
মঙ্গলবার দুপুর ১ টা ৩৭ মিনিটে এই প্রতারক চক্র উপজেলার খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে কল করে টাকা দাবি করে।
এই বিষয়ে নগরকান্দার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
শাহনেওয়াজ আলম বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১ টা ৩৭ মিনিটে নগরকান্দার ইউএনও স্যারের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল নম্বর থেকে আমার কাছে একটা কল আসে। ইউএনও স্যারের মোবাইল নম্বর দেখে গুরুত্বের সাথে ফোনটা ধরি। ইউএনও পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি (যার সাথে কথা বলছিলাম) আমার কাছে নগরকান্দার উল্লেখযোগ্য বড় ব্যবসায়ীর তালিকার বিবরণী জানতে চান।
তিনি আরো বলেন, মোবাইল ফোনে ইউএনও পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি আমার কাছে আরো জানতে চান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল কে। উত্তরে আমি একজনের নাম বলি। এসময় আমি কিছুটা হতভম্ব হয়ে যাই এবং আমার সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইউএনও পরিচয় দাবী করা ব্যক্তির কাছে জানতে চাই, স্যার এসব তালিকা তো আপনার কাছে আছে। উত্তরে তিনি বলেন, আপনি তাকে কল করে ডেকে নেন এবং বলেন বিকাল চারটার আগে আমাকে যেন দুই লক্ষ টাকা দিয়ে যান। বিষয়টি শুনে আমি অবাক হই। এই ধরনের কর্মকাণ্ড ইতিমধ্যে কখনোই হয়নি আমার সাথে।ইউএনও স্যারের সাথে সাত মাস ধরে আছি, অথচ কোন দিন এরকম কোন আচরণ স্যারের কাছ থেকে আমরা পাই নাই। বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে, আমি কাল বিলম্ব না করে দ্রুত ইউএনও স্যারের কাছে এসে স্যারকে বিষয়টি অবহিত করি। স্যার কে বিষয়টা বলার সময়ে ঐ একই সময়ে উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরের অফিসারদের সামনে আবারো কল করেন ইউএনও পরিচয় প্রদানকারী ব্যক্তি।
এদিকে, বিষয়টি জানাজানি হবার পরপরই তাৎক্ষণিক নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির নিজে উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে সতর্কতামূলক বার্তা পোস্ট করেন।
এ বিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আমার বেশ কয়েকটি পোগ্রাম ছিল। উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও উপজেলা প্রশাসনের নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করি। এসময় আমি বিষয়টা জানতে পারি। চক্রটি প্রথমে আমার নাম্বার ক্লোন করে। পরে অন্য একটি নাম্বার থেকে আমার নাম ব্যবহার করে টাকা দাবি করে। কে বা কারা করছে সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি প্রতারক চক্র। এই বিষয়ে নগরকান্দা থানায় একটি সাধারন ডায়রী সহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনী সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সর্বসাধারণকে তথ্য আদান-প্রদান ও লেনদেনের বিষয়ে সতর্ক থাকতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়েছে।