
শুভরঞ্জন বড়ুয়া, আলীকদম ( বান্দরবান ) প্রতিনিধি।
আলীকদমে গরু কিনতে গিয়ে একজন যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। ঘটনার চার দিন পরও অপহৃত দুলাল মিয়ার (৩৬) সন্ধান মেলেনি। পরিবারের অভিযোগ, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গত ৪ জুন আলীকদম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিখোঁজ যুবকের বড় ভাই মো. হেলাল (৫৬), যেখানে তিনি মনজুর আলমকে অভিযুক্ত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুন দুপুর আনুমানিক ৩টার দিকে আলীকদম থানাধীন ৪নং কুরুক পাতা ইউপির অন্তর্গত ৬নং ওয়ার্ডের ছোটবেতী এলাকায় গয়াল গরু কেনার জন্য যান দুলাল মিয়া।
তার সাথে ছিলেন মনজুর আলম নামের একজন। মনজুর আলম, ইসহাক আহাম্মদের ছেলে এবং ইসহাক কারবারী পাড়া, ৭নং ওয়ার্ড, ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, দুলাল মিয়াকে দৈনিক ১০০০ টাকা বেতনে গয়াল কিনতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ঘটনার পর মনজুর আলম বাড়িতে ফিরে এলেও দুলাল মিয়া আর ফেরেননি। দুলাল মিয়ার বড় ভাই মো. হেলাল মনজুর আলমের কাছে তার ছোট ভাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মনজুর জানান, অজ্ঞাতনামা ৫ জন মুরুং সন্ত্রাসী ঘটনাস্থল থেকে দুলাল মিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মনজুর আলম বলেন, “কুরুকপাতা ইউনিয়নের ছোট বেতী এলাকার রণজিত ম্রো নামে একজন তার কাছে গয়াল গরু আছে বলে জানায়। এরপর আমার শ্রমিক দুলালসহ আমি ছোটবেতী যাই।
বেলা আড়াইটার দিকে রণজিত ম্রোর বাসায় আমরা পৌঁছাই। রণজিতের স্ত্রী জানায়, তার স্বামী বাড়িতে নেই। তখন আমরা সেখান থেকে গর্জন পাড়ার দিকে যাই। যাওয়ার পথে ৫ জন ম্রোর সাথে আমাদের দেখা হয়। তারাও আমাদের সাথে গর্জন পাড়া যাবে বলে সঙ্গী হয়।
তিনি আরও বলেন, “কিছুদূর যাওয়ার পর এদের মধ্য হতে ৩ জন দুলালকে ধরে ফেলে। অন্য ২ জন আমাকে ধরে ফেলে। তখন আমি চিৎকার করে ‘আমাকে বাঁচাও’ বলে নদীতে ঝাঁপ দিই। সেখান থেকে আমি কোনোমতে চলে আসি।
এরপর ওরা ৫ জন দুলালকে ধরে পাহাড়ের দিকে নিয়ে গেছে। সন্ত্রাসীরা আমাকেও ধরে ফেলেছিল। দুলাল মিয়াকে তিনজনে ধরেছিল আর আমাকে ধরেছিল দুজন। আমি দুজনের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হতে সক্ষম হই।”
পরিবারের উদ্বেগ ও পুলিশের বক্তব্য : দুলাল মিয়ার নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার পরিবার চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। মো. হেলাল আলীকদম থানায় দায়ের করা অভিযোগে
বিবাদী মনজুর আলমকে তলব করে ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন এবং তার ভাইকে উদ্ধারের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। দুলাল মিয়ার খোঁজাখুঁজির কারণে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে, আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন বলেন, “বিষয়টি আমি জানি, তবে এখনো পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি।