সৈয়দ মনির আহমদ, সোনাগাজী (ফেনী) :
ফেনীর সোনাগাজীতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। কোন হতাহতের খবর না পাওয়া গেলেও বসতঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন চর ছান্দিয়ার দিনমজুর রাসেলসহ ৭টি পরিবার। এছাড়া বিদ্যুতের খুটি ভাঙা, তারছেড়া ও বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ার কারনে ৩০ ঘন্টা অন্ধকারে ছিল সোনাগাজীবাসি।
জানাগেছে, সোমবার ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত হয়েছে দক্ষিণ চর চান্দিয়া এলাকায় অবস্থিত মোহাম্মদ রাসেলের সাজানো ঘর। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তিনি। ঝড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রাসেল। তিনি বলেন, জমিজমা না থাকায় স্থানীয় এক চাষির কাছ থেকে ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছেন। পাশাপাশি দিনমজুরি করেও সংসার চালান। তাঁর আশ্রয়ের শেষ সম্বল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সোনাগাজীর উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সোমবার দুপুরে হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে উপজেলার চর খোন্দকার, জেলেপাড়া ও দক্ষিণ–পূর্ব চর চান্দিয়া এবং সাত নম্বর স্লুইসগেট এলাকায় বেড়িবাঁধ ও গ্রামীণ সড়ক ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে লোকালয়ে জোয়ারের লবণাক্ত পানি ঢুকে গেছে। ভেসে গেছে উপকূলীয় এলাকার শত শত পুকুর ও খামারের মাছ। গাছপালা পড়ে তার ছিঁড়ে ও খুঁটি ভেঙে রোববার মধ্যরাত থেকে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে ৩০ ঘণ্টা পর সোমবার রাতে পৌরসভা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়। একই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্কেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।
৬নং চর চান্দিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মিলন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে তীব্র বাতাসে দক্ষিণ চর চান্দিয়া এলাকাসহ তাঁর ইউনিয়নে অন্তত ২০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে কিছু ঘর ভেঙে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিয়ে তালিকা করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন জানান, রিমালের তাণ্ডবে ৫ হেক্টর জমির ফসল ও ৩৫ টি পুকুরের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম বলায় মিত্র জানান ঘুর্নিঝড়ে ১০টি খুটি ভেঙেছে, ১২টি হেলেছে , ১৩১টি স্পটে তার ছিড়েছে, ০৬টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে, ৬১টি মিটার ভেঙেছে। এতো আনুমানিক ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপজেলায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ঝোড়ো বাতাসে বেশ কিছু কাঁচা ও টিনের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোর দেয়া তথ্যমতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।