সুরেশ চন্দ্র রায়, মানিকগঞ্জ :
ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রদত্ত চাল থেকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মানিক ২ টন চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (৭ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাল বিতরণে দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার মো. রুবেল মিয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও আসন্ন ঈদ উপলক্ষে সারা দেশে ভিজিএফ-এর আওতায় অসহায় দুঃস্থদের জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মানিক পঞ্চাশ কেজি ওজনের ২শ ৬৪ বস্তা চাল বরাদ্দ পান। কিন্তু চাল বিতরণের সময় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে চেয়ারম্যানের চাল আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। শুরু হয় চেয়ারম্যানের সাধু সাজার কাহিনী।
শনিবার(৬ এপ্রিল) চাল বিতরণকালে ৪২ বস্তা চাল কম পান দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার। বিষয়টি জানাজানি হলে চেয়ারম্যান এটি ধামাচাপা দেয়ার লক্ষ্যে বিকেল নাগাদ অন্যত্র থেকে নিম্নমানের চাল ৮ কেজি হারে ভোক্তাদের মাঝে বিতরণ করেন।
শিবালয় উপজেলার খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শামীমা সিরাজ জানান, গত বৃহস্পতিবার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ঈদের ভিজিএফ চাল গ্রহণ করা হয়েছে। এখান থেকে নিধারিত বরাদ্দ প্রাপ্ত চাল ওই দিনের পর আর ছিল না।
চাল বিতরণে দায়িত্বে থাকা শিবালয় উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. রুবেল মিয়া বলেন, নিয়মানুসারে এসব চাল বিতরণের একদিন আগে ট্যাগ অফিসারকে জানাতে হয়। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চাল বিতরণের সময় তাকে জানিয়েছিলেন। সরেজমিনে দেখা যায়, ৪২ বস্তায় দুই টন কেজি চাল কম রয়েছে। বাকি চাল কোথায় জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকেন। এসময় তিনি বলেন, ট্রাক না পাওয়ায় ওইদিন চাল আনা সম্ভব হয়নি, তাই আজ এনেছেন। পরে বিকালে তিনি অন্য কর্মসূচির নিম্নমানের চাল নিয়ে আসেন, যা এ বরাদ্দের চালের সঙ্গে মিল নেই। পরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ওই চাল বিতরণ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব রায় জানান, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পঞ্চাশ কেজি ওজনের বিয়াল্লিশ বস্তা চাল কম পেয়েছেন। পরে চেয়ারম্যান জেলা থেকে ত্রিশ কেজির বস্তায় চাল কিনে আনেন। বিষয়টি লিখিতভাবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মানিক জানান, গত বৃহস্পতিবার ট্রাকের অভাবে চাল খাদ্য গুদাম থেকে আনতে পারেননি। তাই বিতরণের দিন এনেছেন। এক ইউপি সদস্যের কারণে এ সমস্যা হয়েছে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ট্যাগ অফিসারের কাছে লিখিত বক্তব্য চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
সুরেশ চন্দ্র রায়