অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সেবা

স্বাস্থ্য, ২ মার্চ ২০২৩, 213 বার পড়া হয়েছে,

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ পরিচালিত বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচিটি সত্যিকার অর্থেই মানুষের উপকারে আসছে। এই কর্মসূচি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারলে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা কমে আসবে। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই কর্মসূচিটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সরকারের সুনজর প্রয়োজন।

সোমবার রাজধানীর হোটেল প্যান পাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, রিজলভ টু সেভ লাইভস, যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘‘হাইপার টেনশন ইন কমিউনিটি: চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে এবং গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুসের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আওয়াল রিজভী।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিচার্স ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলোজি এন্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ পরিচালিত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি দেশের ৫৪টি উপজেলায় চলমান রয়েছে। সরকার এই মডেলটা ১৮২টি উপজেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ কর্মসূচির সঙ্গে বাস্তবায়ন করার কথা জানিয়েছে। এই কর্মসূচির বড় সফলতা হচ্ছে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা। তবে বর্তমানে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করতে না পারায় সেবাগ্রহীতারা ভোগান্তিতে পড়ছেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এই কর্মসূচির সেবাগ্রহীতা। তাদের সেবা নিতে উপজেলা সদরে আসতে হয়। এতে অনেক সময় ভোগান্তিতে পড়েন তারা। তাই এই সেবা যদি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাহলে সেবাগ্রহীতাদের দোড়গোড়ায় এই সেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

বৈঠকে ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, তারা চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ওষুধ সরবরাহের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হবে।

কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের সহ-সভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস বলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন পরিচালিত কর্মসূচিটি বেশ ভালো। এটি সাধারণ মানুষের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বেশ ভূমিকা রাখছে। এই কর্মসূচিটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। যাতে প্রান্তিক মানুষের দোড় গোড়ায় এই সেবা পৌঁছে দেওয়া যায়।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসি ইনকিউবেটরের ভাইস প্রেসিডেন্ট বন্দনা শাহ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য) সৈয়দ মজিবুল হক, অতিরিক্ত সচিব (ঔষধ প্রশাসন) মো. এনামুল হক, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আহমেদুল কবীর, কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আশরাফুন্নেসা, বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁঞা, প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জুবায়ের, এলিমিনেশন অব ট্রান্স ফ্যাট প্রজেক্টের সমন্বয়ক ডা. শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান, প্রোগ্রাম অফিসার ডা. শাম্মী আক্তার প্রমুখ।