
তাসলিমা আকতার রেখা ;বিজয়নগর প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান রতনের বিরুদ্ধে সরকারি জমি নিজের দাবি করে দোকান তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ওই জায়গায় লাল নিশানা টাঙানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পত্তন ইউনিয়নের সীমনা বাজার সংলগ্ন টানমনিপুর গ্রামের সরকারি খাস জায়গাটিতে ৪০ বছর আগে তদানিন্তন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) ক্যাম্প ছিল। পরবর্তীতে বিডিআর ক্যাম্প বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় সেখানে ৩০টিরও বেশি ভূমিহীন পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়। এরপর থেকেই জায়গাটি ‘শিবির’ নামে পরিচিতি পায়। তবে ইউপি চেয়ারম্যান ও বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রতন জায়গাটি নিজের দাবি করে সম্প্রতি সেখানে দোকানঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সরেজমিনে দেখা যায়, আশ্রয় শিবিরকে ঢেকে দিয়ে এর সড়ক সংলগ্ন ৩৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট পাঁচটি টিনশেড ঘর তোলা হয়েছে। এতে করে শিবিরের বাসিন্দারা চলাফেরা করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। সিমেন্টের খুঁটি ব্যবহার করে উঠানো পাঁচটি ঘরেরই টিন দিয়ে চালা দেওয়া হয়েছে। তবে ঘরগুলোতে বেড়া নির্মাণের আগেই স্থানীয় ভূমি অফিসের লোকজন লাল নিশানা টানিয়ে দিয়েছেন। আশ্রয় শিবিরের বাসিন্দা মজিদা বেগম বলেন, ‘৪০ বছর ধরে আমরা শিবিরে আছি। রতন চেয়ারম্যানের তোলা দোকানঘরের কারণে আমাদের চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে। আমরা ভয়ে তাকে বাধাও দিতে পারছি না। আমরা গরিব বলে চেয়ারম্যান জোর করে এই কাজ করছে’। শিবিরের আরেক বাসিন্দা নজরুল মিয়া জানান, পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি শিবিরে থাকেন। চেয়ারম্যান জোর করে জায়গাটিতে দোকানঘর করছেন। তিনি জায়গাটি নিজের দাবি করছেন। যদি দোকান করা হয় তাহলে শিবিরের বাসিন্দাদের চলাফেরায় অনেক সমস্যা হবে। তবে পত্তন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান রতন দখলের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে বলেন, ‘আরএস জরিপ অনুযায়ী জায়গাটি আমার দাদার। ত্রিপুরার রাজা মানিক্য বাহাদুরের কাছ থেকে এই জায়গাটি খাজনা মূলে বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন তিনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার পেছনে লেগেছে। আসলে এখানে ঘর করাটা তারা সহ্য করতে পারছে না’। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খাঁন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ রাসেলকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।