
মোঃ আব্দুল হান্নান,নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামের দিনমজুর ফুল মিয়ার ২ ছেলে টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম ৩য় শ্রেণি ও ফয়সল ইসলাম ৫ম শ্রেণীর ছাত্র।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রওশনারা রীনা জানায়, মা মনোয়ারা বেগস ও বৃদ্ধ দাদা ইদু মিয়া তাদের বাড়ি থেকে স্কুলে নিয়ে আসে যাওয়া করে। মা মনোয়ারা বেগম জানায় প্রথমে সিরাজুলের নাকে একটি ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝড়ত। পরবর্তীতে একটি দাঁত পরলে প্রায় দুই মাস দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত ঝড়ে।স্থানীয় ডাক্তার,করিরাজের,ঝাড়ফুঁক কোনো কাজে আসেনি।
যে যেখানে যাওয়ার কথা বলেছে পিতা ফুল মিয়া তাদের নিয়ে সেখানেই গিয়েছেন। কিন্তু কোথাও কোনো ফল হয়নি। অবশেষে উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে পাঠানো পিতা ফুল মিয়া সহায় সম্বল বিক্রি করে সুধী মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা এনে পুত্রদের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করেন।
প্রথমে সিরাজ ও পরে ফয়সলকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ছাড়পত্রে দেখাযায় ১১জুলাই ২০১৮ ভর্তি হয়ে ১৯জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত চিকিৎসা নেয় তারা ৷ ডাঃ ফাতেমা ফারজানার চিকিৎসা সহায়তায় একটু সুস্থ হলে পরবর্তী ঔষধপত্র নিয়ে বাড়িতে আসেন।
এখন পুনরায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে তাদের চিকিৎসা প্রয়োজন। তারা দিন দিন পঙ্গত্বের দিকে ধাবিত হচ্ছে। মা মনোয়ারা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমার সন্তানরা উন্নত চিকিৎসা পেলে ভালো হয়ে যেত। দাদা ইদু মিয়া (৭০) কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন কাল বৈশাখির ঝড়ে খেয়া পাড়াপাড়ের নৌকাটি ভেংগে গেছে।
দাদা বলেন তাদের পড়ার স্থানটিও দিতে পারছিনা। তারা পড়তে খুবই আগ্রহী। স্কুলের সভাপতি মোঃ কামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান তাদের চিকিৎসার উদ্যোগ নিলে ছাত্র-শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির পক্ষে সাধ্যমতে সহায়তা করব।
কথা হয় নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ রহিম,ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান ও ভলাকুট কে.বি. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আতাউর রহমান গিলমান এর সাথে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন,তারা নিয়মিত ছাত্র হলে আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভাব্য চিকিৎসা সহায়তা দিতে চেষ্টা করব।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আবুল খায়ের জানান,সমাজসেবা অফিস থেকে তাদের প্রতিবন্ধী কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্ভবত আমরা দুই ছাত্রকেই চিকিৎসা সহায়তা দিতে পারব।
এ ব্যায়বহুল চিকিৎসা দিন মজুর ফুল মিয়ার পক্ষে সম্ভব নয়। বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চায় পিতা ফুল মিয়া। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছে।